Monday, May 14, 2018

ভোটের টুকরো কথা

2007 এ জয়েন করার পর

2008 এই পঞ্চায়েত ভোট। ডিউটি পেলাম রামপুরহাট 2 নং (মাড়গ্রাম) ব্লকে, রিজার্ভ প্রিসাইডিং অফিসার। সবাই বলেন পঞ্চায়েত ভোট করা খুবই কঠিন কাজ। যেহেতু রিজার্ভ এ ছিলাম। শত ডাকেও সাড়া না দিয়ে নিজেকে বাঁচিয়েছিলাম। ভোটের দিন সকালে বোম এর আওয়াজ শুনেছিলাম, তখন থেকে 'এই ডাকলো, এই ডাকলো' ভয়ে সারাটা দিন কাটিয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত ডিউটি না করেই ছাড় পেয়েছিলাম।

2009 এ লোকসভা ভোট। সেবারে আমাদের গ্রুপ ডি ছাড়া কারোই ডিউটি আসেনি। আরেকবার ডিউটি থেকে বেঁচে গিয়েছিলাম।

2011 এ বিধানসভা ভোট। রিজার্ভ প্রিসাইডিং  ডিউটি পেলাম লাভপুর ব্লকে। প্রথম বারের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবারেও ডিউটি যাওয়া থেকে নিজেকে বাঁচলাম। ভোটের দিন বিকেলে পাঁচটা নাগাদ ছাড়া পেয়ে আহমেদপুর এ বাড়ি ফেরার ট্রেন ধরেছিলাম।

2013 এর পঞ্চায়েত ভোট। এবার আর ছাড় নেই। প্রিসাইডিং অফিসার ময়ূরেশ্বর 2 অর্থাৎ কোটাসুর এ। ডি সি থেকে 5 কিমি এর মধ্যেই প্রাইমারি স্কুলে ডিউটি। প্রথম বার ভোট করতে চলেছি, বাকি অফিসাররা অভিজ্ঞ হওয়ায় নিশ্চিন্তেই ছিলাম। কারন ট্রেনিং আর ভোটের মাঝের সময়ে যথেষ্ট পড়াশোনা ও অভিজ্ঞতার কথা শুনে নিজেকে ডিউটির উপযোগী তৈরি করেছিলাম। ব্যালটে ভোটের সমস্যা হয়েই থাকে সেটা সহজেই সমাধান করেছিলেন পোলিং অফিসাররা। তবে অপ্রীতিকর কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় নি। নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরেছিলাম। এবার অবশ্য কাউন্টিং এর ডিউটিও করতে হয়েছিল। কোনো সমস্যা ছাড়াই সেকাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছিল।

2014 এর লোকসভা ভোট। এবার ডিউটি সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজে। প্রপার টাউন এ হওয়ায় মিডিয়া বা ভি আই পি দের ভিজিট নিয়ে সামান্য চিন্তা থাকলেও তার সম্মুখীন হতে হয়নি। স্বাভাবিক পরিবেশে নিয়মমাফিক ভোট শেষ করে নির্দিষ্ট বাসে চেপে ভোর রাতেই বাড়ি।

2016 এর বিধানসভা ভোট। এবার দুবরাজপুর পৌরসভা এলাকার একটি প্রাইমারি স্কুলে। কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন না হয়েই সুন্দর ভাবে ভোটের কাজ শেষ করে বাকি দুটো টিমের জন্য কিছুক্ষন বসে থাকতে হয়েছিল। কেন্দ্রিয় বাহিনীদের সঙ্গে আর সি তে পৌঁছেই সোজা কাউন্টারে গিয়ে সব জমা করে সিউড়ি স্টেশনে বনাঞ্চল এক্সপ্রেস ধরে বাড়ি।

2018 এর পঞ্চায়েত। আমাদের ব্লকে বিরোধী নমিশনেশন না থাকায় ভোটও নেই। ডিউটি ও নেই। এক অন্য ধরনের ভোটের পরিবেশে ডিউটি হীন থেকে টিভি তে ভোটের খবর দেখার অভিজ্ঞতা আবার অন্যরকম।

পুনশ্চঃ ভোট করতে যেতে কোনো ভয় নেই, ভয় শুধু হিংসাত্মক পরিবেশকে, যেখানে প্রাণে বাঁচার তাগিদে ডিউটিও ভুলে যেতে হয়। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলে সুস্থ ভাবে বাড়ি ফেরার ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিন্ত হওয়া যায়।