Sunday, July 1, 2018

বিরল প্রতিভা (সংগৃহীত)

ইংরাজী ভাষায় ব্যুৎপত্তির জন্য তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী সি. এন. আন্নাদুরাই - এর খ্যাতি ছিল জগৎজোড়া ।

একজন ভারতীয়ের ইংরাজী ভাষায় অসামান্য কৃতিত্বকে স্বীকৃতি জানাতে ও "Chubb Fellowship" প্রদানের জন্য অ্যামেরিকার "Yale University" তাঁকে আমন্ত্রণ জানায় 1967 সালে ।

সম্মান প্রদানের পর্ব পরিসমাপ্তির পর ছাত্রদের সাথে পরিচিতি এবং ভাব বিনিময় করার সময় ছাত্ররা প্রস্তুত করে রেখেছিলো বাছাই করা প্রশ্নমালা যা নাকি ইংরাজী ভাষায় ব্যুৎপত্তির নির্ণায়ক ।

হলভর্তি ছাত্রদের মধ্যে থেকে একজন উঠে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো, " একশোটা ইংরাজী শব্দ বলুন যাদের মধ্যে A, B, C এবং D এই চারটি alphabet থাকবে না।"

ভারতীয় পণ্ডিত সাথে সাথে বলা শুরু করলেন,
"One, Two, Three, Four....." Ninetynine পর্যন্ত বলে থেমে গেলেন । হলের উপস্থিত সকলেই বিহ্বল, ধক্ ধক্ করতে থাকা হৃদযন্ত্রের অনুরণনে, বিস্ফারিত নয়নে অপেক্ষমাণ ১০০তম শব্দটির  জন্য ! যদি তিনি বলে ফেলেন Hundred, তাহলে তো সর্বনাশ ! নিষিদ্ধ তালিকার alphabet 'D' একবার নয় তাতে দু'বার আছে !!

কিন্তু একশোতম শব্দের অকস্মাৎ বিষ্ফোরণ  "STOP"। উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা, উৎকণ্ঠা সবকিছুই Stop, শুধু হৃদপিন্ডের ধকধকানিটা ছাড়া !

পরে আন্নাদুরাই বলেছিলেন, তিনি Zero দিয়ে শুরু করে Ninetynine পর্যন্ত বলে একশোটা শব্দ বানাতে পারতেন, কিন্তু তাহলে
suspense-টা থাকতো না !

তাঁকে দ্বিতীয় যে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হয়েছিল তা ছিল আরো হতবিহ্বলকর ! তাঁকে বলা হয় ইংরাজীতে একটি বাক্য তৈরি করতে যার মধ্যে 'Because' শব্দটি পরপর তিনবার থাকবে !
আবার শব্দহীন ! কোনো উত্তর নেই ! নীরবতা ভঙ্গ হলো ভারতীয় পণ্ডিতের বজ্রগম্ভীর কণ্ঠে উচ্চারিত একটি বাক্যে :
"A sentence never ends with 'Because', because, because is a conjunction."

নিরবচ্ছিন্ন, প্রলম্বিত করতালিতে মুখরিত স্তব্ধতা ; অনন্ত নীরবতা  টুকরো টুকরো, খান খান !

Monday, May 14, 2018

ভোটের টুকরো কথা

2007 এ জয়েন করার পর

2008 এই পঞ্চায়েত ভোট। ডিউটি পেলাম রামপুরহাট 2 নং (মাড়গ্রাম) ব্লকে, রিজার্ভ প্রিসাইডিং অফিসার। সবাই বলেন পঞ্চায়েত ভোট করা খুবই কঠিন কাজ। যেহেতু রিজার্ভ এ ছিলাম। শত ডাকেও সাড়া না দিয়ে নিজেকে বাঁচিয়েছিলাম। ভোটের দিন সকালে বোম এর আওয়াজ শুনেছিলাম, তখন থেকে 'এই ডাকলো, এই ডাকলো' ভয়ে সারাটা দিন কাটিয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত ডিউটি না করেই ছাড় পেয়েছিলাম।

2009 এ লোকসভা ভোট। সেবারে আমাদের গ্রুপ ডি ছাড়া কারোই ডিউটি আসেনি। আরেকবার ডিউটি থেকে বেঁচে গিয়েছিলাম।

2011 এ বিধানসভা ভোট। রিজার্ভ প্রিসাইডিং  ডিউটি পেলাম লাভপুর ব্লকে। প্রথম বারের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবারেও ডিউটি যাওয়া থেকে নিজেকে বাঁচলাম। ভোটের দিন বিকেলে পাঁচটা নাগাদ ছাড়া পেয়ে আহমেদপুর এ বাড়ি ফেরার ট্রেন ধরেছিলাম।

2013 এর পঞ্চায়েত ভোট। এবার আর ছাড় নেই। প্রিসাইডিং অফিসার ময়ূরেশ্বর 2 অর্থাৎ কোটাসুর এ। ডি সি থেকে 5 কিমি এর মধ্যেই প্রাইমারি স্কুলে ডিউটি। প্রথম বার ভোট করতে চলেছি, বাকি অফিসাররা অভিজ্ঞ হওয়ায় নিশ্চিন্তেই ছিলাম। কারন ট্রেনিং আর ভোটের মাঝের সময়ে যথেষ্ট পড়াশোনা ও অভিজ্ঞতার কথা শুনে নিজেকে ডিউটির উপযোগী তৈরি করেছিলাম। ব্যালটে ভোটের সমস্যা হয়েই থাকে সেটা সহজেই সমাধান করেছিলেন পোলিং অফিসাররা। তবে অপ্রীতিকর কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় নি। নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরেছিলাম। এবার অবশ্য কাউন্টিং এর ডিউটিও করতে হয়েছিল। কোনো সমস্যা ছাড়াই সেকাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছিল।

2014 এর লোকসভা ভোট। এবার ডিউটি সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজে। প্রপার টাউন এ হওয়ায় মিডিয়া বা ভি আই পি দের ভিজিট নিয়ে সামান্য চিন্তা থাকলেও তার সম্মুখীন হতে হয়নি। স্বাভাবিক পরিবেশে নিয়মমাফিক ভোট শেষ করে নির্দিষ্ট বাসে চেপে ভোর রাতেই বাড়ি।

2016 এর বিধানসভা ভোট। এবার দুবরাজপুর পৌরসভা এলাকার একটি প্রাইমারি স্কুলে। কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন না হয়েই সুন্দর ভাবে ভোটের কাজ শেষ করে বাকি দুটো টিমের জন্য কিছুক্ষন বসে থাকতে হয়েছিল। কেন্দ্রিয় বাহিনীদের সঙ্গে আর সি তে পৌঁছেই সোজা কাউন্টারে গিয়ে সব জমা করে সিউড়ি স্টেশনে বনাঞ্চল এক্সপ্রেস ধরে বাড়ি।

2018 এর পঞ্চায়েত। আমাদের ব্লকে বিরোধী নমিশনেশন না থাকায় ভোটও নেই। ডিউটি ও নেই। এক অন্য ধরনের ভোটের পরিবেশে ডিউটি হীন থেকে টিভি তে ভোটের খবর দেখার অভিজ্ঞতা আবার অন্যরকম।

পুনশ্চঃ ভোট করতে যেতে কোনো ভয় নেই, ভয় শুধু হিংসাত্মক পরিবেশকে, যেখানে প্রাণে বাঁচার তাগিদে ডিউটিও ভুলে যেতে হয়। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলে সুস্থ ভাবে বাড়ি ফেরার ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিন্ত হওয়া যায়।